এই কিতাব হচ্ছে বিশুদ্ধতম হাদীস সংকলন। মহানবী (সা)-এর পবিত্র মুখনিঃসৃত বাণী, তাঁর কর্ম এবং মৌন সমর্থন ও অনুমােদন হচ্ছে হাদীস বা সুন্নাহ। পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা এবং শরীয়তের বিভিন্ন হুকুম-আহকাম ও দিকনির্দেশনার জন্য সুন্নাহ হচ্ছে দ্বিতীয় উৎস। প্রকৃতপক্ষে পবিত্র কুরআন ও হাদীস উভয়ই ওহী দ্বারা প্রাপ্ত। কুরআন হচ্ছে আল্লাহর কালাম আর হাদীস হচ্ছে মহানবীর বাণী ও অভিব্যক্তি।
মহানবী (সা)-এর আমলে এবং তার তিরােধানের অব্যবহিত পরে মুসলিম দিগ্বিজয়ীগণ ইসলামের দাওয়াত নিয়ে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েন। এ সময় দুর্গম পথের অমানুষিক কষ্ট স্বীকার করে যে কয়জন অসাধারণ মেধাসম্পন্ন ব্যক্তি হাদীস সংকলন ও সংরক্ষণের জন্য কঠোর সাধনা করেছেন তাঁদের মধ্যে সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব ইমাম বুখারী তিনি জামে সহীহ’ নামে প্রায় সাত হাজার হাদীস-সম্বলিত একটি সংকলন প্রস্তুত করেন, যা তার জন্মস্থানের নামে বুখারী শরীফ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে ইসলামের প্রায় প্রতিটি দিক নিয়েই বিভিন্ন অধ্যায় ও পরিচ্ছেদে সুবিন্যস্ত এ গ্রন্থটি ইসলামী জ্ঞানের এক প্রামাণ্য ভাণ্ডার।
বাংলাদেশের মাদ্রাসাগুলােতে এটি একটি অপরিহার্য পাঠ্যগ্রন্থ। পবিত্র কুরআন ও হাদীসের জ্ঞান অর্জন সকল মুসলমানের জন্যই অপরিহার্য। এ বাস্তবতা থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সিহাহ্ সিত্তাহ্ ও অন্যান্য বিখ্যাত এবং প্রামাণ্য হাদীস সংকলন অনুবাদ ও তা প্রকাশ করে চলেছে।
বিজ্ঞ অনুবাদকমণ্ডলী ও যােগ্য সম্পাদনা পরিষদের মাধ্যমে এর কাজ সম্পন্ন হওয়ায় এর অনুবাদ হয়ে উঠেছে বিশুদ্ধ, প্রাঞ্জল ও সহজবােধ্য। ১৯৮৯ সালে বুখারী শরীফের প্রথম খণ্ডের অনুবাদ প্রকাশিত হবার পর থেকেই ছাত্র-শিক্ষক, গবেষক ও সর্বস্তরের সচেতন পাঠকমহল তা বিপুল আগ্রহের সাথে গ্রহণ করে। পরবর্তীতে এর প্রতিটি খণ্ড প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে প্রিয় পাঠকমহলের কাছে সমাদৃত হয়।