Thursday , November 21 2024

সুরা কাফিরুন

সুরা কাফিরুন

শ্রেণীঃ মাক্কী সূরা
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রমঃ ১০৯
আয়াতের সংখ্যাঃ ৬
পারার ক্রমঃ ৩০
রুকুর সংখ্যাঃ ১

← পূর্ববর্তী সূরা সূরা আল-কাওসার
পরবর্তী সূরা → সূরা নাসর

সূরা আল কাফিরুন (আরবি: سورة الكافرون‎‎) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১০৯ তম সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৬ টি। রসূলুল্লাহ্‌ সূরা কাফিরুন এবং সূরা এখলাস ফজরের সুন্নতে এবং মাগরিব পরবর্তী সুন্নতে এ দু’টি সূরা অধিক পরিমাণে পাঠ করতেন। হাদীসে এসেছে, “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সূরা ‘কুল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরুন’ কুরআনের এক চতুর্থাংশ”।
এই সূরাটি সকল মুসলিমদের জন্যে উদাহরণ যে, কোন পরিস্থিতিতেই তারা শত্রুর সাথে আপসে যাবে না যা ইসলাম সমর্থন করেনা এবং এমন পরিস্থিতিতে তারা এই সূরার উপদেশ অনুসরণ করবে যা তাদের (অবিশ্বাসীদের) সম্পূর্ণভাবে হতাশ করবে।

সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। সূরাটির বিষয় এবং ঘটনা পরিষ্কার ভাবে স্থান, সময় ও পরিস্থিতিকে বুঝাতে সক্ষম রয়েছে।
সূরাটি ইসলামের উত্থানের মুহূর্তে অবতীর্ণ হয়েছে যখন সংখ্যায় অবিশ্বাসীদের তুলনায় মুসলিমরা সংখ্যালঘু এবং রসূল সাঃ প্রবল চাপের মধ্যে ছিলেন। অবিশ্বাসীরা তাকে তাদের ধর্মের (মূর্তিপূজা ও ইসলাম পরিপন্থী কার্যক্রম) পথে ডাকার চেষ্টা করলে তিনি কোনপ্রকার দ্বন্দ্ব ছাড়াই প্রত্যাখ্যান করেন এবং তাদের হতাশার মাঝে ফেলে দেন।

শানে নুযূল

হযরত ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন, ওলীদ ইবনে মুগীরা, আস ইবনে ওয়ায়েল, আসওয়াদ ইবনে আবুদল মোত্তালিব ও উমাইয়া ইবনে খলফ প্রমুখ মক্কার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কয়েকজন একবার রসূলুল্লাহ্‌ – এর কাছে এসে বললঃ আসুন, আমরা পরস্পরের মধ্যে এই শান্তিচুক্তি করি যে, একবছর আপনি আমাদের উপাস্যদের এবাদত করবেন এবং একবছর আমরা আপনার উপাস্যের এবাদত করব।[২]

তিবরানীর রেওয়ায়েতে হযরত ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন, কাফেররা প্রথমে পারস্পরিক শান্তির স্বার্থে রসূলুল্লাহ্‌ – এর সামনে এই প্রস্তাব রাখল যে, আমরা আপনাকে বিপুল পরিমাণে ধনৈশ্বর্য দেব, ফলে আপনি মক্কার সর্বাধিক ধনাঢ্য ব্যক্তি হয়ে যাবেন। আপনি যে মহিলাকে ইচ্ছা বিবাহ করতে পারবেন। বিনিময়ে শুধু আমাদের উপাস্যদেরকে মন্দ বলবেন না। যদি আপনি এটাও মেনে না নেন, তবে একবছর আমরা আপনার উপাস্যের এবাদত করব এবং একবছর আপনি মাদের উপাস্যদের এবাদত করবেন।[৩]

আবু সালেহ্‌-এর রেওয়ায়েতে হযরত ইবনে আব্বাস বলেনঃ মক্কার কাফেররা পারস্পরিক শান্তির লহ্ম্যে এই প্রস্তাব দিল যে, আপনি আমাদের কোন প্রতিমার গায়ে কেবল হাত লাগিয়ে দিন, আমরা আপনাকে সত্য বলব। এর পরিপ্রেহ্মিতে জিবরাঈল সূরা কাফিরূন নিয়ে আগমন করলেন। এতে কাফেরদের ক্রিয়াকর্মের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার অকৃতিম এবাদতের আদেশ আছে।

আয়াতসমূহ

বিস্‌মিল্লাহির রাহ্‌মানির রাহীম

قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ
لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَا عَبَدْتُمْ
وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ


কু’ল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরুন ৷
লাআ বুদু মা তা’আবুদুন ৷
অলা আনতুম আবিদুনা মা আ’বুদ ৷
অলা আনা আবিদুম মা আবাত্তুম ৷
অলা আনতুম আবিদুনা মা আ’বুদ ৷
লাকুম দিনুকুম অলিয়া দিন ৷


বলুন, হে কাফেরকূল,
আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর।
এবং তোমরাও এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি
এবং আমি এবাদতকারী নই, যার এবাদত তোমরা কর।
তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি।
তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।

About Abdul Latif Sheikh

Check Also

সুরা ফাতিহা আয়াত ২ এর তাফসীর

সুরা ফাতিহা আয়াত ২ ১:২ اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ (২) সমস্ত প্রশংসা সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর …

বিসমিল্লাহ এর নাম ও ইতিহাস জানুন

১:১ بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ ১. রহমান, রহীম আল্লাহর নামে। ১. সাধারণত আয়াতের অনুবাদে বলা হয়ে …

কুরআন তেলাওয়াত এর পূর্বে কি পড়তে হয়

কুরআন তেলাওয়াত এর পূর্বে পড়তে হয় أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ অর্থ: বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *