♦️♦️যে সব কারণে রোযা নষ্ট হয়↪️↪️
✔️✔️৩। পানাহার ⤵️
পানাহার বলতে পেটের মধ্যে যে কোন প্রকারে কোন খাদ্য অথবা পানীয় পৌঁছানোকে বুঝানো হয়েছে; চাহে তা মুখ দিয়ে হোক অথবা নাক দিয়ে, পানাহারের বস্ত্ত যেমনই হোক; উপকারী বা উপাদেয় হোক অথবা অপকারী বা অনুপাদেয়, হালাল হোক অথবা হারাম, অল্প হোক অথবা বেশী।
➡️বলা বাহুল্য, (বিড়ি, সিগারেট, গাঁজা প্রভৃতির) ধূমপান রোযা নষ্ট করে দেয়; যদিও তা অপকারী, অনুপাদেয় ও হারাম পানীয়।
✔️✔️৪। যা এক অর্থে পানাহার
↔️স্বাভাবিক পানাহারের পথ ছাড়া অন্য ভাবে পানাহারের কাজ নিলে তাতেও রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। যেমন খাবারের কাজ দেয় এমন (স্যালাইন ইঞ্জেকশন) নিলে রোযা হবে না।
✔️✔️৫। ইচ্ছাকৃত বমি করা
✔️✔️৬। মহিলার মাসিক অথবা নিফাস শুরু হওয়া
✔️✔️বেহুশ হওয়া
➡️রোযাদার যদি ফজর থেকে নিয়ে মাগরেব পর্যন্ত বেহুশ থাকে, তাহলে তার রোযা শুদ্ধ হবে না এবং তাকে ঐ দিনের রোযা কাযা রাখতে হবে।
♦️♦️♦️রমাযানে যে যে কাজ করা রোযাদারের কর্তব্য↩️↩️
✔️✔️১। তারাবীহর নামায বা কিয়ামে রামাযান
↪️তারাবীহর নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নাতে মুআক্কাদাহ।
✔️✔️তারাবীহর নামায আদায় করার সময় হল, রমাযানের (চাঁদ দেখার রাত সহ) প্রত্যেক রাত্রে এশার ফরয ও সুন্নত নামাযের পর বিত্র পড়ার আগে। অবশ্য শেষ রাত্রে ফজর উদয় হওয়ার আগে পর্যন্ত এর সময় বিস্থির্ণ।
✔️✔️তারাবীহর নিয়ত
⏭️নিয়ত করা জরুরী; কিন্তু উচ্চারণ করে পড়া বিদআত।
✔️✔️তারাবীহর রাকআত-সংখ্যা
⤵️সুন্নত ও আফযল হল এই নামায বিত্র সহ ১১ রাকআত পড়া। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর রাতের নামায সম্বন্ধে সর্বাধিক বেশী খবর রাখতেন যিনি, সেই আয়েশা (রাঃ)কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, রমাযানে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর নামায কত রাকআত ছিল? উত্তরে তিনি বললেন, ‘তিনি রমাযানে এবং অন্যান্য মাসেও ১১ রাকআত অপেক্ষা বেশী নামায পড়তেন না।’(বুখারী ১১৪৭, মুসলিম ৭৩৮নং)
✔️✔️তাছাড়া খোদ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কখনো কখনো ১৩ রাকআত নামাযও পড়েছেন। আর তা এ কথারই দলীল যে, রাতের নামাযের ব্যাপারে কোন সংকীর্ণতা নেই; অর্থাৎ তার এমন কোন নির্দিষ্ট রাকআত-সংখ্যা নেই যার অন্যথা করা যাবে না।
✔️✔️মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর রাতের নামায সাধারণভাবে একই নিয়ম-পদ্ধতির অনুসারী ছিল না। বরং তাঁর এই নামায ছিল একাধিক ধরনের একাধিক নিয়মের।
✔️✔️তিনি কোন রাতে ১১ রাকআত নামায পড়তেন। প্রত্যেক ২ রাকআতে সালাম ফিরে ১০ রাকআত পড়তেন এবং পরিশেষে ১ রাকআত বিত্র পড়তেন।
(আহমাদ, মুসনাদ, মুসলিম, আবূ দাঊদ, প্রমুখ, ঐ ৯০পৃঃ)
✔️✔️তিনি ১৩ রাকআত নামায পড়তেন। প্রথমে হাল্কা করে ২ রাকআত দিয়ে শুরু করতেন। প্রত্যেক ২ রাকআতে সালাম ফিরতেন। প্রত্যেক ২ রাকআতকে পূর্বের অপেক্ষা হাল্কা করতেন। এইভাবে ১০ রাকআত পড়ার পর পরিশেষে ৩ রাকআত বিত্র পড়তেন।
(মুসলিম প্রমুখ সালাতুত তারাবীহ আলবানী ৮৬পৃঃ দ্রঃ)
✔️✔️৩ রাকআত বিত্র পড়লে ২ নিয়মে পড়া যায়; (ক) ২ রাকআত পড়ে সালাম ফিরে পুনরায় উঠে আর এক রাকআত পড়তে হয়। অথবা (খ) ৩ রাকআত একটানা পড়ে শেষ রাকআতে বসে তাশাহহুদ-দরূদ পড়ে সালাম ফিরতে হয়। এ ক্ষেত্রে মাগরেবের নামাযের মত ২টি তাশাহহুদ পড়া বৈধ নয়। কারণ, বিত্র নামাযকে মাগরেবের নামাযের মত করে পড়তে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সুতরাং তেমন করে পড়া কমপক্ষে মকরূহ।
✔️✔️কিছু উলামা বলেন, কিন্তু যদি কেউ তার চাইতে বেশী নামায পড়তে চায়, তাহলে তাতে কোন বাধা ও ক্ষতি নেই। কারণ, রাতের নামায প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘রাতের নামায ২ রাকআত ২ রাকআত করে। অতঃপর তোমাদের কেউ যখন ফজর হয়ে যাওয়ার ভয় করে, তখন সে যেন ১ রাকআত বিত্র পড়ে নেয়। এতে তার পড়া নামাযগুলো বেজোড় হয়ে যাবে।’’(বুখারী ৯৯০, মুসলিম ৭৪৯নং)
✔️✔️পক্ষান্তরে ২০ রাকআত তারাবীহ নির্দিষ্ট হওয়ার ব্যাপারে কোন হাদীস নেই। সাহাবাদের তরফ থেকে যে আসার বর্ণিত করা হয়, তার সবগুলিই যয়ীফ।(মুহাদ্দিস আল্লামা আলবানীর পুস্তিকা ‘স্বালাতুত তারাবীহ’ দ্রষ্টব্য)
✔️✔️তারাবীহর জামাআত
↪️রমাযানের কিয়াম জামাআতে পড়া বিধেয়; যেমন একাকী পড়াও বৈধ। তবে মসজিদে জামাআত সহকারে এই নামায আদায় করাই (অধিকাংশ উলামার মতে) উত্তম।
✔️✔️তারাবীহর জামাআতে মহিলাদের অংশগ্রহণ
▶️যদি কোন ফিতনা সৃষ্টির আশঙ্কা না থাকে, তাহলে তারাবীহর জামাআতে মহিলাদের উপস্থিত হওয়া দোষাবহ নয়। অবশ্য শর্ত হল, তারা যেন সম্ভ্রমপূর্ণ লেবাস পরিধান করে, বেপর্দা হয়ে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে এবং কোন প্রকারের সুবাস ও সুগন্ধি ব্যবহার না করে মসজিদে যায়।
✔️✔️কোন কিশোর, পুরুষ বা মহিলার ইমামতিতে কোন বাড়িতে তারাবীহর নামাযের জন্য মহিলাদের পৃথক জামাআত করা দোষাবহ নয়।
✔️✔️তারাবীহর নামাযের জন্য সুমধুর কণ্ঠবিশিষ্ট হাফেয-ক্বারী ইমাম অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া দোষাবহ নয়। তবে (ক্বারী সাহেবের তরফ থেকে) পারিশ্রমিক নির্দিষ্ট করা উচিৎ নয়। যেহেতু এক জামাআত সলফ এ কাজকে অপছন্দ করেছেন। অবশ্য মসজিদের জামাআত যদি অনির্দিষ্ট- ভাবে তাঁকে অনেক কিছু দিয়ে পুরস্কৃত বা সাহায্য করেন, তাহলে তাতে কোন ক্ষতি নেই।
✔️✔️এ সালাতে প্রত্যেক দুই রাকআতে সালাম ফিরে তসবীহ, ইস্তিগফার বা দুআ পড়া দোষাবহ নয়। তবে এ সময় উচ্চস্বরে সে সব পড়া উচিৎ নয়। কারণ, তার কোন দলীল নেই।
✔️✔️প্রকাশ থাকে যে, ঐ সকল যিকর বা দুআ পড়া যায় যা ফরয নামাযের পর পড়া হয়ে থাকে।
পক্ষান্তরে এই নামাযের প্রত্যেক ২ বা ৪ রাকআত পরপর সালাম ফিরে নির্দিষ্ট যিক্র; যেমন ‘‘সুবহানা যিল মুলকি অল-মালাকূত, সুবহানা যিল ইয্যাতি অল-আযামাহ—’’ পড়া বা সম্মিলিত মুনাজাত করা বিদআত।এ স্থলে মহানবী (সা) অথবা তাঁর কোন সাহাবী (রাঃ) কর্তৃক কোন নির্দিষ্ট দুআ বা যিকর বর্ণিত হয়নি।
✔️✔️মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) রাতের কিয়ামকে খুব লম্বা করতেন।
এই তারাবীহর নামায তিনি দীর্ঘ সময় নিয়ে ধীরে ধীরে পড়তেন।
তাই খুবই দ্রুত গতিতে না পড়া উচিৎ।