Thursday , November 21 2024
সর্বশেষ

সূরা মুহাম্মদ

শ্রেণীঃ মাদানী সূরা
নামের অর্থঃ নবী মুহাম্মদ
অন্য নামঃ
সূরার ক্রমঃ ৪৭
আয়াতের সংখ্যাঃ ৩৮
পারার ক্রমঃ ২৬
রুকুর সংখ্যাঃ ৪
সিজদাহ্‌র সংখ্যাঃ নেই

← পূর্ববর্তী সূরা সূরা আল-আহ্‌ক্বাফ
পরবর্তী সূরা → সূরা আল-ফাত্‌হ

নামকরণঃ

এই সূরাটির ২ নং আয়াতের وَآمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَى مُحَمَّدٍ বাক্যাংশ থেকে مُحَمَّدٍ অংশটি অনুসারে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরার মধ্যে محمد (‘মুহাম্মদ’) শব্দটি আছে এটি সেই সূরা।

এই সূরাটির অপর একটি নাম ‘কিতাল’। ২০ নম্বর আয়াতে উল্লেখিত শব্দ হতে এই নামটি নেয়া হয়। তাছাড়া সূরাটিতে মোটামুটিভাবে ‘কিতাল’ সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা এসেছে।

নাযিল হওয়ার সময় ও স্থাঃ

সূরার বিষয়বস্তু সাক্ষ দেয় যে, সূরাটি হিজরতের পরে এমন এক সময় মদীনায় নাযিল হয়েছিল যখন যুদ্ধ করার নির্দেশ হয়েছিল বটে কিছু কার্যত যুদ্ধ তখনও শুরু হয়নি ।

যে সময় এ সূরাটি নাযিল হয়েছিল সে সময়ের পরিস্থিতি ছিল এই যে, বিশেষ করে পবিত্র মক্কা নগরীতে এবং সাধারণভাবে গোটা আরব ভূমির সর্বত্র মুসলমানদেরকে জুলুম নির্যাতনের লক্ষ্যস্থল বানানো হচ্ছিলো এবং তাদের জীবন অত্যন্ত দূর্বিসহ করে দেয়া হয়েছিলো। মুসলমানগণ সমস্ত অঞ্চল থেকে এসে মদীনার নিরাপদ আশ্রয়ে জড়ো হয়েছিল। কিন্তু কুরাইশ গোত্রের কাফেররা এখানেও তাদেরকে শান্তিতে থাকতে দিতে প্রস্তুত ছিল না। মদীনার ক্ষুদ্র জনপদটি চারদিক থেকেই কাফেরদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়েছিল। তারা এটিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য বদ্ধপরিকর ছিল। এ পরিস্থিতিতে মুসলমানদের জন্য মাত্র দুটি পথই খোলা ছিল। হয় তারা দ্বীনে হকের দাওয়াত ও তাবলীগের কাজই শুধু নয় বরং আনুগত্য ও অনুসরণ পরিত্যাগ করে জাহেলিয়াতের কাছে আত্মসমর্পণ করবে। নয়তো জীবন বাজি রেখে প্রাণপণে লড়াই করবে এবং চিরদিনের জন্য এ বিষয়ের ফায়সালা করে দেবে যে, আরবের মাটিতে ইসলাম থাকবে না জাহেলিয়াত থাকবে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’আলা মুসলমানদেরকে দৃঢ় সংকল্পের পথ দেখিয়েছেন যেটি ঈমানদারদের একমাত্র পথ। তিনি সূরা হজ্জে (আয়াত ৩৯) প্রথমে তাদেরকে যুদ্ধের অনুমতি দিয়েছেন এবং পরে সূরা বাকারায় (আয়াত ১৯০) যুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সে সময় সবাই জানতো যে, এ পরিস্থিতিতে যুদ্ধের অর্থ কী? মদীনায় ঈমানদারদের একটা ক্ষুদ্র দল ছিল যার যুদ্ধ করার মত পুরো এক হাজার যোদ্ধা সংগ্রহ করার সামর্থও ছিল না। অথচ তাদেরকেই তরবারি নিয়ে সমগ্র আরবের জাহেলিয়াতের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। তাছাড়া যে জনপদে আশ্রয়হীন ও সহায় সম্বলহীন শত শত মুহাজির এখনো পুরোপুরি পুনর্বাসিত হতে পারেনি, আরবের অধিবাসীরা চারদিক থেকে আর্থিক বয়কটের মাধ্যমে যার মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল এবং অভুক্ত থেকে যুদ্ধের প্রয়োজনীয় সাজ-সরঞ্জাম সংগ্রহ করাও যার পক্ষে কঠিন ছিল এখন তাকেই লড়াই করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।
শান-এ-নযূল

এহেন পরিস্থিতিতে সূরাটি নাযিল করা হয়েছিল । ঈমানদারদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা । এবং এ বিষয়ে প্রাথমিক পথনির্দেশনা দেয়াই এর আলোচ্য ও বক্তব্য । এ দিকটি বিচার করে এর নাম “সূরা কিতাল”ও রাখা হয়েছে । এতে ধারাবাহিকভাবে নিম্নোক্ত বিষয়বস্তু উল্লেখ করা হয়েছে ।

সূরার প্রথমেই বলা হয়েছে যে, এখন দুটি দলের মধ্যে মোকাবিলা হচ্ছে । এ দুটি দলের মধ্যে একটি দলের অবস্থান এই যে, তারা সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং আল্লাহর পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে । কিন্তু অপর দলটির অবস্থান হলো, আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থকে তাঁর বান্দা মুহাম্মাদের ওপর যে সত্য নাযিল হয়েছিল তা তারা মেনে নিয়েছে । এখণ আল্লাহ তা’আলার সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হলো, প্রথমোক্ত দলটির সমস্ত চেষ্টা-সাধনা ও কাজ-কর্ম তিনি নিষ্ফল করে দিয়েছেন এবং শেষোক্ত দলটির অবস্থা সংশোধন করে দিয়েছেন ।

এরপর মুসলমানদের সামরিক বিষয়ে প্রাথমিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে । তাদেরকে আল্লাহর সাহায্য ও দিকনির্দেশনার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে । আল্লাহর পথে কুরবানী পেশ করার জন্য তাদেরকে সর্বোত্তম প্রতিদানের আশ্বাস দেয়া হয়েছে । তাদের এ বলে সান্ত্বনা দেয়া হয়েছে যে, ন্যায় ও সত্যের পথে তাদের প্রচেষ্টা বৃথা যাবে না । বরং দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জায়গাতেই তারা ক্রমান্বয়ে এর অধিক ভাল ফল লাভ করবে ।

তারপর কাফেরদের সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা আল্লাহর সাহায্য ও দিকনির্দেশনা থেকে বঞ্চিত । ঈমানদারদের বিরুদ্ধে তাদের কোন প্রচেষ্টাই কার্যকর হবে না । তারা দুনিয়া ও আখেরাত উভয় ক্ষেত্রেই অত্যন্ত খারাপ পরিণামের সুম্মুখীন হবে । তারা আল্লাহর নবীকে মক্কা থেকে বের করে দিয়ে মনে করেছিলো, যে, তারা বড় রকমের সফলতা লাভ করেছে । অথচ এ কাজ করে তারা প্রকৃতপক্ষে নিজেরা নিজেদের জন্য বড় রকমের ধ্বংস ডেকে এনেছে ।

এরপর মুনাফিকদের উদ্দেশ্য করে কথা বলা হয়েছে । যুদ্ধের নির্দেশ আসার পূর্বে এসব মুনাফিক নিজেদেরকে বড় মুসলমান বলে জাহির করতো । কিন্তু এ নির্দেশ আসার পরে তারা ঘাবড়ে গিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ চিন্তায় কাফেরদের সাথে ষড়যন্ত্র করতে শুরু করেছিল যাতে তারা নিজেদেরকে যুদ্ধের বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে । তাদেরকে স্পষ্টভাবে সাবধান করে দেয়া হয়েছে যে, যারা আল্লাহ এবং তাঁর দীনের সাথে মুনাফিকীর আচরণ করে তাদেরকে কোন আমলই আল্লাহর কাছে গৃহীত হয় না । এখানে যে মৌলিক প্রশ্নে ঈমানের দাবীদার প্রতিটি ব্যক্তির পরীক্ষা হচ্ছে তা হলো, সে ন্যায় ও সত্যের সাথে আছে না বাতিলের সাথে আছে? তার সমবেদনা ও সহানুভূতি মুসলমান ও ইসলামের প্রতি না কাফের ও কুফরীর প্রতি । সে নিজের ব্যক্তি সত্তা ও স্বার্থকেই বেশি ভালবাসে না কি যে ন্যায় ও সত্যের প্রতি ঈমান আনার দাবী সে করে তাকেই বেশি ভালবাসে?এ পরীক্ষায় যে ব্যক্তি মেকী প্রমাণিত হবে আল্লাহর কাছে তার নামায, রোযা এবং যাকাত কোন প্রতিদান লাভের উপযুক্ত বিবেচিত হওয়া তো দূরের কথা সে আদৌ ঈমানদারই নয় ।

অতপর মুসলমানদের উপদেশ দেয়া হয়েছে যে, তারা যেন নিজেদের সংখ্যাল্পতা ও সহায় সম্বলহীনতা এবং কাফেরদের সংখ্যাধিক্য ও সহায় সম্বলের প্রাচুর্য দেখে সাহস না হারায় এবং তাদের সাছে সন্ধির প্রস্তাব দিয়ে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ না করে । এতে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের দুঃসাহস আরো বেড়ে যাবে । বরং তারা যেন আল্লাহর ওপর নির্ভর করে বাতিলকে রুখে দাঁড়ায় এবং কুফরের এ অগ্রাসী শক্তির সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় । আল্লাহ মুসলমানদের সাথে আছেন । তারাই বিজয়ী হবে এবং তাদের সাথে সংঘাতে কুফরী শক্তি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে ।

সর্বশেষে মুসলমানদেরকে আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করার আহবান জানানো হয়েছে । যদিও সে সময় মুসলমানদের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক ছিল । কিন্তু সামনে প্রশ্ন ছিল এই যে, আরবে ইসলাম এবং মুসলমানরা টিকে থাকবে কি থাকবে না । এ প্রশ্নের গুরুত্ব ও নাজুকতার দাবী ছিল এই যে, মুসলমানরা নিজেদেরকে এবং নিজেদের দীনকে কুফরের আধিপত্যের হাত থেকে রক্ষা করার এবং আল্লাহর দীনের বিজয়ী করার জন্য তাদের জীবন কুরবানী করবে এবং যুদ্ধ প্রস্তুতিতে নিজেদের সমস্ত সহায় সম্পদ যথা সম্ভব অকৃপণভাবে কাজে লাগাবে । সুতরাং মুসলমানদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে যে, এ মুহুর্তে যে ব্যক্তি কৃপণতা দেখাবে সে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কোন ক্ষতিই করতে পারবে না , বরং নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করবে । আল্লাহ মানুষের মুখাপেক্ষী নন । কোন একটি দল বা গোষ্ঠী যদি তার দীনের জন্য কুরবানী পেশ করতে টালবাহানা করে তাহলে আল্লাহ তাদের অপসারণ করে অপর কোন দল বা গোষ্ঠীকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন ।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

আরবি উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

বাংলা অনুবাদ
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ أَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ47.1

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১। আল্লাযীনা কাফারূ অছোয়াদ্দু ‘আন্ সাবীলিল্লা-হি আদ্বোয়াল্লা আ’মা-লাহুম্

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১ যারা কুফরী করেছে এবং আল্লাহর পথ থেকে বারণ করেছে, তিনি তাদের আমলসমূহ ব্যর্থ করে দিয়েছেন।

وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَآمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَهُوَ الْحَقُّ مِنْ رَبِّهِمْ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ47.2

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২। অল্লাযীনা আ-মানূ ওয়া আ’মিলুছ্ ছোয়া-লিহা-তি ওয়া আ-মানূ বিমা-নুয্যিলা ‘আলা-মুহাম্মাদিঁও অহুওয়াল্ হাককু র্মি রব্বিহিম্ কাফ্ফারা ‘আন্হুম্ সাইয়িয়া-তিহিম্ অআছ্লাহা বা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২ আর যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে ‘আর তা তাদের রবের পক্ষ হতে (প্রেরিত) সত্য, তিনি তাদের থেকে তাদের মন্দ কাজগুলো দূর করে দেবেন এবং তিনি তাদের অবস্থা সংশোধন করে দেবেন।

ذَلِكَ بِأَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا اتَّبَعُوا الْبَاطِلَ وَأَنَّ الَّذِينَ آمَنُوا اتَّبَعُوا الْحَقَّ مِنْ رَبِّهِمْ كَذَلِكَ يَضْرِبُ اللَّهُ لِلنَّاسِ أَمْثَالَهُمْ 47.3

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩। যা-লিকা বিআন্নাল্লাযীনা কাফারূ ত্তাবা‘উল্ বা-ত্বিলা অআন্নাল্ লাযীনা আ-মানুত্ তাবা‘উল্ হাকক্ব র্মি রব্বিহিম্; কাযা-লিকা ইয়াদ্ব্রিবু ল্লা-হু লিন্না-সি আম্ছা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩ তা এজন্য যে, যারা কুফরী করে তারা বাতিলের অনুসরণ করে, আর যারা ঈমান আনে তারা তাদের রবের প্রেরিত হকের অনুসরণ করে। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্য তাদের দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন।

فَإِذا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا فَضَرْبَ الرِّقَابِ حَتَّى إِذَا أَثْخَنْتُمُوهُمْ فَشُدُّوا الْوَثَاقَ فَإِمَّا مَنًّا بَعْدُ وَإِمَّا فِدَاءً حَتَّى تَضَعَ الْحَرْبُ أَوْزَارَهَا ذَلِكَ وَلَوْ يَشَاءُ اللَّهُ لَانْتَصَرَ مِنْهُمْ وَلَكِنْ لِيَبْلُوَ بَعْضَكُمْ بِبَعْضٍ وَالَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَلَنْ يُضِلَّ أَعْمَالَهُمْ47.4

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৪। ফাইযা-লাক্বীতুমু ল্লাযীনা কাফারূ ফাদ্বোর্য়াবার রিক্ব-ব্; হাত্তা য় ইযা য় আছখান্তুমূহুম্ ফাশুদ্দুল্ অছা-ক্ব ফাইম্মা-মান্নাম্ বা’দু অইম্মা-ফিদা-য়ান্ হাত্তা-তাদ্বোয়া‘আল্ র্হাবু আওযা-রহা-যা-লিক্; অ লাও ইয়াশা-য়ু ল্লা-হু লান্তাছোয়ারা মিন্হুম্ অলা-কিল্ লিইয়াব্লুওয়া বা’দ্বোয়াকুম্ বিবা’দ্ব্; অল্লাযীনা কুতিলূ ফী সাবীলি ল্লা-হি ফালাইঁ ইয়ুদ্বিল্লা আ’মা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৪ অতএব তোমরা যখন কাফিরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের ঘাড়ে আঘাত কর। পরিশেষে তোমরা যখন তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে পর্যুদস্ত করবে তখন তাদেরকে শক্তভাবে বেঁধে নাও। তারপর হয় অনুগ্রহ না হয় মুক্তিপণ আদায়, যতক্ষণ না যুদ্ধ তার বোঝা রেখে দেয় । এটাই বিধান। আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তোমাদের একজনকে অন্যের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তিনি কখনো তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করবেন না।

سَيَهْدِيهِمْ وَيُصْلِحُ بَالَهُمْ47.5

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৫। সাইয়াহ্দীহিম্ অইয়ুছ্লিহু বা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৫ অচিরেই তিনি তাদেরকে হিদায়াত দিবেন এবং তাদের অবস্থা সংশোধন করে দিবেন।

وَيُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ عَرَّفَهَا لَهُمْ47.6

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৬। অইয়ুদ্খিল্ হুমুল্ জ্বান্নাতা ‘র্আরফাহা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৬ আর তিনি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পরিচয় তিনি তাদেরকে দিয়েছেন।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ تَنْصُرُوا اللَّهَ يَنْصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ 47.7

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৭। ইয়া য় আইয়ুহাল্ লাযীনা আ-মানূ য় ইন্ তান্ছুরু ল্লা-হা ইয়ার্ন্ছুকুম্ অ ইয়ুছাব্বিত্ আক্ব্দা-মাকুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৭ হে মুমিনগণ, যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তবে আল্লাহও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দেবেন।

وَالَّذِينَ كَفَرُوا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ47.8

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৮। অল্লাযীনা কাফারূ ফাতা’সা ল্লাহুম্ অআদ্বোয়াল্লা আ’মা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৮ আর যারা কুফরী করে তাদের জন্য রয়েছে ধ্বংস এবং তিনি তাদের আমলসমূহ ব্যর্থ করে দিয়েছেন।

ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ47.9

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৯। যা-লিকা বিআন্নাহুম্ কারিহূ মা য় আন্যালা ল্লা-হু ফাআহ্বাত্বোয়া আ’মা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৯ তা এজন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তারা তা অপছন্দ করে। অতএব তিনি তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করে দিয়েছেন।

أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ دَمَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَلِلْكَافِرِينَ أَمْثَالُهَا47.10

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১০। আফালাম্ ইয়াসীরূ ফিল্ র্আদ্বি ফাইয়ান্জুরূ কাইফা কা-না আ’ক্বিবাতুল্লাযীনা মিন্ ক্বব্লিহিম; দাম্মারল্লা-হু ‘আলাইহিম্ অলিল্কা-ফিরীনা আম্ছা-লুহা-।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১০ তবে কি তারা যমীনে ভ্রমণ করেনি, তারপর দেখেনি যারা তাদের পূর্বে ছিল তাদের পরিণাম কেমন হয়েছিল? আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে এর অনুরূপ পরিণাম।

ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ مَوْلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَأَنَّ الْكَافِرِينَ لَا مَوْلَى لَهُمْ47.11

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১১। যা-লিকা বিআন্নাল্লা-হা মাওলাল্ লাযীনা আ-মানূ অআন্নাল্ কা-ফিরীনা লা-মাওলা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১১ তা এজন্য যে, নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক। আর নিশ্চয় কাফিরদের কোন অভিভাবক নেই।

إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يَتَمَتَّعُونَ وَيَأْكُلُونَ كَمَا تَأْكُلُ الْأَنْعَامُ وَالنَّارُ مَثْوًى لَهُمْ47.12

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১২। ইন্না ল্লা-হা ইয়ুদ্খিলুল্ লাযীনা আ-মানূ অ‘আমিলুছ্ ছোয়া-লিহা-তি জ্বান্না-তিন্ তাজ্ব ্রী মিন্ তাহ্তিহাল্ আন্হার্-; অল্লাযীনা কাফারূ ইয়াতামাত্তাঊ’না অ ইয়াকুলূনা কামা-তাকুলুল্ আন্আমু অন্না-রু মাছ্ওয়াল্লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১২ নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন। যার নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। কিন্তু যারা কুফরী করে তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং তারা আহার করে যেমন চতুষ্পদ জন্তুরা আহার করে। আর জাহান্নামই তাদের বাসস্থান।

وَكَأَيِّنْ مِنْ قَرْيَةٍ هِيَ أَشَدُّ قُوَّةً مِنْ قَرْيَتِكَ الَّتِي أَخْرَجَتْكَ أَهْلَكْنَاهُمْ فَلَا نَاصِرَ لَهُمْ47.13

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১৩। অকায়াইঁয়িম্ মিন্ র্ক্বইয়াতিন্ হিয়া আশাদ্দু কুওয়্রাতাম্ মিন্ র্ক্বইয়াতিকাল্ লাতী য় আখ্রজ্বাত্কা আহ্লাক্না-হুম্ ফালা- না-ছিরলাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১৩ আর তোমার জনপদ যা থেকে তারা তোমাকে বহিষ্কার করেছে তার তুলনায় শক্তিমত্তায় প্রবলতর অনেক জনপদ ছিল, আমি তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম, ফলে তাদের কোনই সাহায্যকারী ছিল না।

أَفَمَنْ كَانَ عَلَى بَيِّنَةٍ مِنْ رَبِّهِ كَمَنْ زُيِّنَ لَهُ سُوءُ عَمَلِهِ وَاتَّبَعُوا أَهْوَاءَهُمْ47.14

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১৪। আফামান্ কা-না ‘আলা-বাইয়িনাতিম্ র্মি রব্বিহী কামান্ যুইয়্যিনা লাহূ সূ-য়ু ‘আমালিহী অত্তাবা‘ঊ য় আহ্ওয়া-য়াহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১৪ যে ব্যক্তি তার রবের পক্ষ থেকে আগত সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত সে কি তার মত, যার মন্দ আমল তার জন্য চাকচিক্যময় করে দেয়া হয়েছে এবং যারা তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করে?

مَثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ فِيهَا أَنْهَارٌ مِنْ مَاءٍ غَيْرِ آسِنٍ وَأَنْهَارٌ مِنْ لَبَنٍ لَمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُ وَأَنْهَارٌ مِنْ خَمْرٍ لَذَّةٍ لِلشَّارِبِينَ وَأَنْهَارٌ مِنْ عَسَلٍ مُصَفًّى وَأَنْهَارٌ مِنْ عَسَلٍ مُصَفًّى وَلَهُمْ فِيهَا مِنْ كُلِّ الثَّمَرَاتِ وَمَغْفِرَةٌ مِنْ رَبِّهِمْ كَمَنْ هُوَ خَالِدٌ فِي النَّارِ وَسُقُوا مَاءً حَمِيمًا فَقَطَّعَ أَمْعَاءَهُمْ47.15

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১৫। মাছালুল্ জ্বান্নাতি ল্লাতী উ‘ইদাল্ মুত্তাকুন্; ফীহা য় আন্হা-রুম্ মিম্ মা-য়িন গইরি আ-সিনিন্ অআন্হা-রুম্ মিল্লাবানিল্লাম্ ইয়াতাগাইর্য়া ত্বোয়া’মুহূ অআন্হা-রুম্ মিন্ খম্রিল লায্ যাতিল্লিশ্-শা রিবীনা অআন্হা-রুম্ মিন্ ‘আসালিম্ মুছোয়াফ্ফা; অলাহুম্ ফীহা-মিন্ কুল্লিছ্ ছামার-তি অমাগ্ফিরতুম্ র্মি রব্বিহিম্; কামান্ হুওয়া খ-লিদূন্ ফিন্না-রি অসুকুমা-য়ান্ হামীমান্ ফাক্বতত্বো‘আ আম্‘আ-য়াহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১৫ মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হল, তাতে রয়েছে নির্মল পানির নহরসমূহ, দুধের ঝর্নাধারা, যার স্বাদ পরিবর্তিত হয়নি, পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহরসমূহ এবং আছে পরিশোধিত মধুর ঝর্নাধারা। তথায় তাদের জন্য থাকবে সব ধরনের ফলমূল আর তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা। তারা কি তাদের ন্যায়, যারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে এবং তাদেরকে ফুটন্ত পানি পান করানো হবে ফলে তা তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেবে?

وَمِنْهُمْ مَنْ يَسْتَمِعُ إِلَيْكَ حَتَّى إِذَا خَرَجُوا مِنْ عِنْدِكَ قَالُوا لِلَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ مَاذَا قَالَ آنِفًا أُولَئِكَ الَّذِينَ طَبَعَ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ وَاتَّبَعُوا أَهْوَاءَهُمْ47.16

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১৬। অমিন্হুম্ মাইঁ ইয়াস্তামি‘উ, ইলাইকা হাত্তা য় ইযা-খারাজু মিন্ ‘ইন্দিকা ক্ব-লূ লিল্লাযীনা ঊতুল্ ‘ইল্মা মা-যা- ক্ব-লা আ-নিফান্ উলা-য়িকাল্ লাযীনা ত্বোয়াবা‘আ ল্লা-হু‘আলা-কুলূ বিহিম্ অত্তাবাঊ’ য় আহ্ওয়া-য়াহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১৬ আর তাদের মধ্যে এমন কতক রয়েছে, যারা তোমার প্রতি মনোযোগ দিয়ে শুনে। অবশেষে যখন তারা তোমার কাছ থেকে বের হয়ে যায় তখন তারা যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে তাদের উদ্দেশ্যে বলে, ‘এই মাত্র সে কী বলল? ’ এরাই তারা, যাদের অন্তরসমূহে আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তারা নিজদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করেছে।

وَالَّذِينَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَآتَاهُمْ تَقْوَاهُمْ 47.17

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১৭। অল্লাযী নাহ্ তাদাও যা-দাহুম্ হুদাঁও অআ-তা-হুম্ তাক্ব ওয়া-হুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১৭ আর যারা হিদায়াতপ্রাপ্ত হয়েছে আল্লাহ তাদের হিদায়াত প্রাপ্তি আরো বৃদ্ধি করেন এবং তাদেরকে তাদের তাকওয়া প্রদান করেন।

فَهَلْ يَنْظُرُونَ إِلَّا السَّاعَةَ أَنْ تَأْتِيَهُمْ بَغْتَةً فَقَدْ جَاءَ أَشْرَاطُهَا فَأَنَّى لَهُمْ إِذَا جَاءَتْهُمْ ذِكْرَاهُمْ47.18

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১৮। ফাহাল্ ইয়ান্জুরূনা ইল্লাস্ সা-‘আতা আন্ তাতিয়াহুম্ বাগ্তাতান্ ফাক্বদ্ জ্বা-য়া আশ্রত্ব ুহা-ফাআন্না-লাহুম্ ইযা-জ্বা-য়াত্হুম্ যিক্র-হুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১৮ সুতরাং তারা কি কেবল এই অপেক্ষা করছে যে, কিয়ামত তাদের উপর আকস্মিকভাবে এসে পড়–ক? অথচ কিয়ামতের আলামতসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কিয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?

فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَاكُمْ47.19

আরবি উচ্চারণ
৪৭.১৯। ফা’লাম্ আন্নাহূ লা য় ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অস্তার্গ্ফি লিযাম্বিকা অলিল্মুমিনীনা অল্মুমিনা-ত্; অল্লা-হু ইয়া’লামু মুতাক্বাল্লাবাকুম্ অমাছ্ওয়া-কুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.১৯ অতএব জেনে রাখ, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তুমি ক্ষমা চাও তোমার ও মুমিন নারী-পুরুষদের ত্র“টি-বিচ্যুতির জন্য। আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি এবং নিবাস সম্পর্কে অবগত রয়েছেন।

وَيَقُولُ الَّذِينَ آمَنُوا لَوْلَا نُزِّلَتْ سُورَةٌ فَإِذَا أُنْزِلَتْ سُورَةٌ مُحْكَمَةٌ وَذُكِرَ فِيهَا الْقِتَالُ رَأَيْتَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ يَنْظُرُونَ إِلَيْكَ نَظَرَ الْمَغْشِيِّ عَلَيْهِ مِنَ الْمَوْتِ فَأَوْلَى لَهُمْ47.20

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২০। অইয়াকুলুল্ লাযীনা আ-মানূ লাওলা-নুয্যিলাত্ সূরাতুন্ ফাইযা-উন্যিলাত্ সূরতুম্ মুহ্কামাতুঁও অযুকিরা ফীহাল্ ক্বিতা-লু রয়াইতাল্ লাযীনা ফী কুলূ বিহিম্ মারাদ্বুইঁ ইয়ান্জুরূনা ইলাইকা নাজোয়রল্ মাগ্শিয়্যি ‘আলাইহি মিনাল্ মাওত্; ফাআওলালাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২০ আর যারা ঈমান এনেছে তারা বলে, ‘কেন একটি সূরা নাযিল করা হয়নি?’ অতঃপর যখন দ্ব্যর্থহীন কোন সুস্পষ্ট সূরা নাযিল করা হয় এবং তাতে যুদ্ধের উল্লেখ থাকে, তখন তুমি দেখবে যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তারা তোমার দিকে মৃত্যুভয়ে মূর্ছিত ব্যক্তির দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য।

طَاعَةٌ وَقَوْلٌ مَعْرُوفٌ فَإِذَا عَزَمَ الْأَمْرُ فَلَوْ صَدَقُوا اللَّهَ لَكَانَ خَيْرًا لَهُمْ47.21

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২১। ত্বোয়া- ‘আতুঁও অক্বওলুম্ মা’রূফুন্ ফাইযা- ‘আযামাল্ আম্রু ফালাও ছোয়াদাকু ল্লা-হা লাকা-না খাইরল্লা-হুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২১ আনুগত্য ও ন্যায়সঙ্গত কথা (তাদের জন্য) উত্তম। অতঃপর যখন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়, তখন যদি তারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা সত্যে পরিণত করত, তবে তা তাদের জন্য কল্যাণকর হত।

فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ47.22

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২২। ফাহাল্ ‘আসাইতুম্ ইন্ তাওয়াল্লাইতুম্ আন্ তুফ্সিদূ ফিল্ র্আদ্বি অতুক্বাত্ব ত্বিঊ’ য় র্আহা-মাকুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২২ তবে কি তোমরা প্রত্যাশা করছ যে, যদি তোমরা শাসন কর্তৃত্ব পাও, তবে তোমরা যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে?

أُولَئِكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ47.23

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২৩। উলা-য়িকাল্লাযীনা লা‘আনাহুমুল্লা-হু ফাআছোয়াম্মাহুম্ অআ’মা য় আব্ছোয়া-রহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২৩ এরাই যাদেরকে আল্লাহ লানত করেন, তাদে কে বধির করেন এবং তাদের দৃষ্টিসমূহকে অন্ধ করেন।

أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ أَمْ عَلَى قُلُوبٍ أَقْفَالُهَا47.24

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২৪। আফালা-ইয়াতাদাব্বারূনাল্ কুরআ-না আম্ ‘আলা- কুলূবিন্ আক্ব ফা-লুহা-।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২৪ তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা- ভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে?

إِنَّ الَّذِينَ ارْتَدُّوا عَلَى أَدْبَارِهِمْ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدَى الشَّيْطَانُ سَوَّلَ لَهُمْ وَأَمْلَى لَهُمْ 47.25

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২৫। ইন্নাল্ লাযীর্না তাদ্দূ ‘আলা য় আদ্বা-রিহিম্ মিম্ বা’দি মা-তাবাইয়্যানা লাহুমুল্ হুদাশ্ শাইত্বোয়া-নু সাওয়্যালা লাহুম্ অআম্লা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২৫ নিশ্চয় যারা হিদায়াতের পথ সুস্পষ্ট হওয়ার পর তাদের পৃষ্টপ্রদর্শনপূর্বক মুখ ফিরিয়ে নেয়, শয়তান তাদের কাজকে চমৎকৃত করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা দিয়ে থাকে।

ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا لِلَّذِينَ كَرِهُوا مَا نَزَّلَ اللَّهُ سَنُطِيعُكُمْ فِي بَعْضِ الْأَمْرِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِسْرَارَهُمْ47.26

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২৬। যা-লিকা বিআন্নাহুম্ ক্ব-লূ লিল্লাযীনা কারিহূ মা-নায্ যালাল্লা-হু সানুত্বী উ’কুম্ ফী বা’দ্বিল্ আম্রি অল্লা-হু ইয়া’লামু ইস্র-রাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২৬ এটি এ জন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা যারা অপছন্দ করে। তাদের উদ্দেশ্যে, তারা বলে, ‘অচিরেই আমরা কতিপয় বিষয়ে তোমাদের আনুগত্য করব’। আল্লাহ তাদের গোপনীয়তা সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন।

فَكَيْفَ إِذَا تَوَفَّتْهُمُ الْمَلَائِكَةُ يَضْرِبُونَ وُجُوهَهُمْ وَأَدْبَارَهُمْ47.27

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২৭। ফাকাইফা ইযা-তাওয়াফ্ফাত্হুমুল্ মালা-য়িকাতু ইয়াদ্ব্রিবূনা উজু হাহুম্ অআদ্বা-রহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২৭ অতঃপর তাদের অবস্থা কেমন হবে, যখন ফেরেশতারা তাদের মুখমণ্ডল ও পৃষ্ঠদেশসমূহে আঘাত করতে করতে তাদের জীবনাবসান ঘটাবে?

ذَلِكَ بِأَنَّهُمُ اتَّبَعُوا مَا أَسْخَطَ اللَّهَ وَكَرِهُوا رِضْوَانَهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ47.28

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২৮। যা-লিকা বিআন্নাহুমুত্তাবা‘ঊ মা য় আস্খাত্বোয়াল্লা-হা
অকারিহূ রিদ্বওয়া-নাহূ ফাআহ্বাত্বোয়া আ’মা-লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২৮ এটি এ জন্য যে, তারা এমন সব বিষয়ের অনুসরণ করেছে যা আল্লাহকে ক্রোধান্বিত করেছে এবং তারা তাঁর সন্তোষকে অপছন্দ করেছে। ফলে আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ নিস্ফল করে দিয়েছেন।

أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ أَنْ لَنْ يُخْرِجَ اللَّهُ أَضْغَانَهُمْ47.29

আরবি উচ্চারণ
৪৭.২৯। আম্হাসিবাল্লাযীনা ফী কুলূ বিহিম্ মারাদ্বুন্ আল্লাইঁ ইয়ুখ্রিজ্বা ল্লা-হু আদ্ব ্গ-নাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.২৯ নাকি যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তারা ধারণা করেছে যে, আল্লাহ তাদের গোপন বিদ্বেষভাব প্রকাশ করে দিবেন না?

وَلَوْ نَشَاءُ لَأَرَيْنَاكَهُمْ فَلَعَرَفْتَهُمْ بِسِيمَاهُمْ وَلَتَعْرِفَنَّهُمْ فِي لَحْنِ الْقَوْلِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَعْمَالَكُمْ 47.30

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩০। অলাও নাশা-য়ু লায়ারইনা-কাহুম্ ফালা‘আরাফ্তাহুম্ বিসীমা-হুম্; অলাতা’রিফান্নাহুম্ ফী লাহ্নিল্ ক্বাওল্; অল্লা-হু ইয়া’লামু আ’মালাকুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩০ আর যদি আমি চাইতাম তবে আমি তোমাকে এদের দেখিয়ে দিতে পারতাম। ফলে লক্ষণ দেখেই তুমি তাদের চিনতে পারতে। তবে তুমি অবশ্যই কথার ভংগিতে তাদের চিনতে পারবে। আল্লাহ তোমাদের আমলসমূহ জানেন।

وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّى نَعْلَمَ الْمُجَاهِدِينَ مِنْكُمْ وَالصَّابِرِينَ وَنَبْلُوَ أَخْبَارَكُمْ47.31

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩১। অলানাব্লুওয়ান্নাকুম্ হাত্তা-না’লামাল্ মুজ্বা-হিদীনা মিন্কুম্ অছ্ছোয়া-বিরীনা অনাব্লুওয়া আখ্বা-রকুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩১ আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি প্রকাশ করে দেই তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদকারী ও ধৈর্যশীল এবং আমি তোমাদের কথা- কাজ পরীক্ষা করে নেব।

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ وَشَاقُّوا الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدَى لَنْ يَضُرُّوا اللَّهَ شَيْئًا وَسَيُحْبِطُ أَعْمَالَهُمْ47.32

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩২। ইন্নাল্লাযীনা কাফারূ অছোয়াদ্দু ‘আন্ সাবীলি-হি অ শা-ল্লাক্ব কুর রসূলা মিম্ বা’দি মা -তাবাইয়্যানা লাহুমুল্ হুদা-; লাইঁয়্যাদ্বরু রুল্লা-হা শাইয়া-অ সাইয়ুহ্বিতু‘আমা-লাহুম্-।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩২ নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, আল্লাহর পথে বাধা দিয়েছে এবং তাদের নিকট হিদায়াতের পথ সুস্পষ্ট হওয়ার পরও রাসূলের বিরোধিতা করেছে, তারা আল্লাহর কোনই ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। আর শীঘ্রই তিনি তাদের আমলসমূহ নিষ্ফল করে দেবেন।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَلَا تُبْطِلُوا أَعْمَالَكُمْ47.33

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩৩। ইয়া য় আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ য় আত্বী ‘উল্লা-হা অআত্বী‘র্উ রাসূলা অলা-তুব্ত্বিলূ য় আ’মা-লাকুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩৩ হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। আর তোমরা তোমাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করো না।

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ مَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ 47.34

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩৪। ইন্নাল্লাযীনা কাফারূ অছোয়াদ্দু ‘আন্ সাবীলিল্লা-হি ছুম্মা মা-তূ অহুম্ কুফ্ফা-রুন্ ফালাইঁ ইয়াগ্ফিরল্লা-হু লাহুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩৪ নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে এবং আল্লাহর পথে বাধা দিয়েছে। তারপর কাফির অবস্থায়ই মারা গেছে, আল্লাহ কখনই তাদের ক্ষমা করবেন না।

فَلَا تَهِنُوا وَتَدْعُوا إِلَى السَّلْمِ وَأَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ وَاللَّهُ مَعَكُمْ وَلَنْ يَتِرَكُمْ أَعْمَالَكُمْ47.35

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩৫। ফালা-তাহিনূ অতাদ্‘ঊ য় ইলাস্ সাল্মি অ আন্তুমুল্ আ’লাওনা অল্লা-হু মা‘আকুম্ অলাইঁ ইয়াতিরকুম্ আ’মা-লাকুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩৫ অতএব তোমরা হীনবল হয়ো না ও সন্ধির আহ্বান জানিও না এবং তোমরাই প্রবল। আর আল্লাহ তোমাদের সাথেই রয়েছেন এবং কখনই তিনি তোমাদের কর্মফল হ্রাস করবেন না।

إِنَّمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَإِنْ تُؤْمِنُوا وَتَتَّقُوا يُؤْتِكُمْ أُجُورَكُمْ وَلَا يَسْأَلْكُمْ أَمْوَالَكُمْ47.36

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩৬। ইন্নামাল্ হা ইয়া-তুদ্দুন্ইয়া-লা‘ইবুঁও অলাহ্ওয়ুন্ অইন্ তুমিনূ অতাত্তাকু ইয়ুতিকুম্ উজুরকুম্ অলা-ইয়াস্য়াল্কুম্ আম্ওয়া-লাকুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩৬ দুনিয়ার জীবন তো কেবল খেল-তামাশা ও অর্থহীন কথাবার্তা। আর যদি তোমরা ঈমান আন এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে তিনি তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিদান দিবেন এবং তিনি তোমাদের কাছে ধন-সম্পদ চাইবেন না।

إِنْ يَسْأَلْكُمُوهَا فَيُحْفِكُمْ تَبْخَلُوا وَيُخْرِجْ أَضْغَانَكُمْ47.37

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩৭। ইঁইয়াস্য়াল্কুমূ হা- ফাইয়ুহ্ফিকুম্ তাব্খালূ অইয়ুখ্রিজ্ব্ আদ্ব্গ-নাকুম্ ।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩৭ যদি তিনি তোমাদের নিকট তা চান, অতঃপর তিনি তোমাদের ওপর প্রবল চাপ দেন, তাহলে তো তোমরা কার্পণ্য করবে। আর তিনি তোমাদের গোপন বিদ্বেষসমূহ বের করে দেবেন।

هَاأَنْتُمْ هَؤُلَاءِ تُدْعَوْنَ لِتُنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَمِنْكُمْ مَنْ يَبْخَلُ وَمَنْ يَبْخَلْ فَإِنَّمَا يَبْخَلُ عَنْ نَفْسِهِ وَاللَّهُ الْغَنِيُّ وَأَنْتُمُ الْفُقَرَاءُ وَإِنْ تَتَوَلَّوْا يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُونُوا أَمْثَالَكُمْ 47.38

আরবি উচ্চারণ
৪৭.৩৮। হা য় আন্তুম্ হা য় য়ুলা-য়ি তুদ্‘আওনা লিতুন্ ফিকু ফী সাবীলিল্লা-হি ফামিন্কুম্ মাইঁ ইয়াব্খালু অ মাইঁ ইয়াব্খল ফাইন্নামা-ইয়াব্খালু ‘আন্ নাফ্স্হ্; অল্লা-হুল্ গনিইয়ু ওয়া আন্তুমুল্ ফুক্বার-য়ু অইন্ তাতাওয়াল্লাও ইয়াস্তাব্দিল্ ক্বওমান্ গইরকুম্ ছুম্মা লা-ইয়াকূ নূ য় আম্ছা- লাকুম্।

বাংলা অনুবাদ
৪৭.৩৮ তোমরাই তো তারা, তোমাদের আহ্বান করা হচ্ছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করবে। অথচ তোমাদের কেউ কেউ কার্পণ্য করছে। তবে যে কার্পণ্য করছে সে তো নিজের প্রতিই কার্পণ্য করছে। আর আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের ছাড়া অন্য কোন কওমকে স্থলাভিষিক্ত করবেন। তারপর তারা তোমাদের অনুরূপ হবে না।

About Abdul Latif Sheikh

Check Also

idf image

সুরা আল ইমরান আয়াত ১০২-১০৫ এর তাফসির

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ حَقَّ تُقٰتِهٖ وَ لَا تَمُوۡتُنَّ اِلَّا وَ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ  وَ …

সুরা ইখলাস এর ফযিলত

সুরা আন আনফাল

সুরা আন আনফাল নামের অর্থঃ যুদ্ধ লব্ধ সম্পদ শ্রেনীঃ মাদানী সুরা ক্রমঃ ৮ আয়াত সংখ্যাঃ …

সুরা ইখলাস এর ফযিলত

সূরা আত-তাওবাহ্‌

সূরা আত-তাওবাহ্‌ শ্রেণীঃ মাদানীনামের অর্থঃ অনুশোচনাঅন্য নামঃ আল-বারাহ্ (শাস্তি থেকে অব্যাহতি) সূরার ক্রমঃ ৯আয়াতের সংখ্যাঃ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *